মোঃ মিজানুর রহমান, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জাহাজ ধ্বংসের জন্য সমুদ্র তলদেশে ব্যবহৃত ‘টর্পেডো’ নামক অস্ত্র সদৃশ একটি বস্তু ভেসে এসেছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর একটি খালে। যা দৈর্ঘ্যে প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট।রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের মীরকান্দা গ্রাম সংলগ্ন ভাঙা খালে বস্তুটিকে দেখতে পায় গ্রামবাসী। সে সময় ভাসমান ওই বস্তুটি দেখতে ভিড় করে স্থানীয় লোকজন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বস্তুটি দেখে ভারী কোনো অস্ত্র ভেবে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। খবর পেয়ে রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।বস্তুটির কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় লোকজনদের। অন্যত্র যাতে ভেসে না যায়, এ জন্য রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে বস্তুটিকে।মৌডুবি ইউনিয়নের আরাফাত হোসেন বলেন, ‘বস্তুটি দেখতে ভারী কোনো অস্ত্রের মত। তাই এটিকে প্রশাসন উদ্ধার করে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ’গ্রামবাসীর ধারণা, পার্শ্ববর্তী রাবনাবাদ চ্যানেল হয়ে হয়তো এটি ভাসতে ভাসতে এই খালে এসেছে।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, কোস্টগার্ডকে বিষয়টি অবহিত করা হলে ছবি দেখে তারা প্রাথমিকভাবে জানায় এটি টর্পেডো হতে পারে। টর্পেডো ডুবন্ত অবস্থায় থাকে, যেহেতু এটি ভেসে আসছে-তাহলে সম্ভবত ব্যবহৃত। তবুও ঘটনাস্থলে গিয়ে কোস্টগার্ড বিষয়টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
এ ব্যাপারে কোস্টগার্ড রাঙ্গাবালী আউটপোস্টের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের আন্ধারমানিক নদীতে যে টিমটি আছে সেটি ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। যতটুকু আমি দেখলাম ওটা টর্পেডো হতে পারে, মিসাইল না। টর্পেডোর মাঝখানে যেভাবে জোড়া থাকে, ওটারও আছে। যেকোনো বড় জাহাজ ধ্বংসকে করে দেওয়ার কাজে টর্পেডো ব্যবহার হয়। এটা নৌবাহিনীর কাছে আছে। ’ তিনি আরও বলেন, ‘টর্পেডো অনেক ভারী থাকে। সাধারণত এটা পানির নিচে থাকে। যেহেতু এটি ভেসে আসছে, সুতরাং ব্যবহার হয়েছে কিংবা ড্যামেজ হয়েছে বলে ধারণা করছি। তাই পানিতে ভেসে ভেসে এসেছে। তবে যদি ভেতরে কোনো বাতাস থাকে তাহলে বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য বোম ডিসপোজাল ইউনিট গিয়ে ওটা পরীক্ষা করে দেখতে পারে। আমাদের যে টিম ঘটনাস্থলে গেছে তার রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, টর্পেডো হচ্ছে এক ধরনের স্ব-চালিত অস্ত্র, যা পানির নিচে বিস্ফোরক ওয়ারহেড বহন করে এবং লক্ষবস্তুর সংষ্পর্শে বা কাছাকাছি আসার পর বিস্ফোরিত হতে পারে। এটি পানির নিচে চালিত হয় এবং পানির নিচে বা উপরে উভয় স্থান হতে নিক্ষেপ করা যায়। এগুলোকে বিভিন্ন প্রকারের উৎক্ষেপকের দ্বারা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব।