কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রংতুলির আঁচরে ফুটিয়ে তুলেছেন ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতি।
প্রিয়ন্ত মজুমদার, স্টাফ রিপোর্টার (মুরাদনগর,কুমিল্লা) :
দেয়ালে রাজনৈতিক পোস্টার নির্বিচারে লাগিয়ে দেয়ালের সাথে করা হয়েছিল অমানবিক নির্যাতন।সাধারণ মানুষগুলো দেয়ালটি দেখলে ঘৃণাভরে চোখ প্রত্যাখ্যান করতো হরহামেশাই।মানুষের ধারণা ছিল সরকারি অফিসের বাউন্ডারি দেয়াল বরাদ্দ শুধু পোস্টার লাগিয়ে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যম মাত্র।সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করেছে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছেলে-মেয়েরা।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা নিজেদের নাস্তার টাকা একত্রিত করে ক্রয় করেছিল রং তুলি, রং, তারপিন সহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।তাদের কর্মতৎপরতায় আগ্রহী কাঁচা হাতে উপজেলা পরিষদের বাউন্ডারি দেওয়ালে আঁকা হয়েছে ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্মৃতি।যেখানে ঠাঁই করে নিয়েছে দাবা বোর্ডে সৈনিক কর্তৃক রাজাকে পরাজিত করার শৈল্পিক সৃষ্টিকর্ম,সূর্যোদয়ের দৃশ্যে মিছিলরত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান, জেনারেশন-জেড এর বিপ্লবী নেতৃত্ব,আবু সাঈদের বুকচিতিয়ে সাহসী লড়াই,মুগ্ধর পানি বিতরণ সহ সারা দেশে সকল মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা।সকাল থেকে দেয়াল পরিষ্কার করে রংতুলিতে বিপ্লবের চিত্র তুল ধরছে তারা।সরকার পতন আন্দোলনের আগের লেখাগুলো মুছে দিয়ে তারা দেয়ালে এঁকেছে নানা ধরনের ছবি।লিখছেন অনেক সুন্দর সুন্দর বাণী।তীব্র তাপদহন উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের মানবসেবা মূলক কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়ে রাস্তার পার্শ্ববর্তী রয়েল ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্ট বিতরণ করেছে শীতল শরবত।সাদেকুর রহমান,উম্মে তাবাসসুম নাবিলা, ইয়াসমিন আক্তার কেয়া,মুশফিকা রহমান সোহানী,মারিয়া ও তিথি জানায়, আন্দোলনে জয়ী হওয়ার পর আমাদের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে।আমরা রাস্তা পরিষ্কার করে ট্রাফিকের কাজ ও দেয়াল লিখনীতেই সীমাবদ্ধ থাকবো না।আমরা চাই বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য বাংলাদেশ নিশ্চিত করা। তাই দেশ সংস্কারেও আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ী।রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীদের সাথে কথা হলে তারা প্রতিবেদককে জানান, আমরা মুরাদনগরের মাটিতে সরকারি স্থাপনা গুলোতে এই প্রথম গ্রাফিতির কাজ দেখেছি। যারা কাজ করেছে সবাই পাঁকা নয় তবে দেশপ্রেমের জায়গা থেকে করেছে কাজগুলো। তাদের শিল্পকর্মের ছবি তুলেছি স্মার্টফোনের ক্যামেরায়। বাসায় নিয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেকে দেখিয়ে দেশপ্রেমের জন্য তাকে উৎসাহ প্রদান করবো।