প্রিয়ন্ত মজুমদার, স্টাফ রিপোর্টার :
টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে কুমিল্লার দুঃখ নামে পরিচিত গোমতী নদীর জল দ্রুত বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন স্থানে জলধারা বিপদসীমা অতিক্রম করায় জল প্রবেশ শুরু করেছে লোকালয়ে। গোমতী নদীর কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর অংশের নিচু স্থানগুলো ইতোমধ্যে ডুবতে শুরু করেছে। নদী তীরবর্তী ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে নষ্ট হতে শুরু করেছে কৃষকের ফসল। স্রোতের আঘাতে মাছের প্রজেক্টের বাঁধ ভেঙে চাষকৃত মাছ বেরিয়ে পড়েছে, ফলে প্রজেক্ট মালিকদের মাথায় নেমেছে চিন্তার ভাঁজ।উপজেলার ভূবনঘর, দড়িকান্দি, দিলালপুর, রহিমপুর, জাহাপুর সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন প্লাবনে ডুবে দিনপার করছে তীব্র আশংকায়। একাধিক স্থানে ডুবে গিয়েছে যাতায়াতের প্রধান সব রাস্তা। তাই জল উপেক্ষা করে দৈনিন্দন কাজ সম্পন্ন করতে যাতায়াতের বাহন হিসেবে ব্যবহার করছেন ভ্যানগাড়ী ও ছোট নৌকা।গোমতী নদীর পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়কের কারণে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে একাধিক গ্রামের কয়েক লক্ষ মানুষের। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা আসতে পারছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো ভাসছে পানির নিচে।মুরাদনগর দূর্গা রাম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছে, গোমতী ব্রিজের নিচের অংশ তলিয়ে যাওয়ায় তারা স্কুলে যেতে পারছে না। আগে সিএনজি ও অটোরিক্সা করে ১০টাকা ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করা যেতো। নৌকা ও ভ্যানে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সড়কের খানাখন্দে ভ্যানগাড়ী উল্টে যাওয়ার ভয় রয়েছে। মেয়েরা জল মারিয়ে যাওয়া নিরাপদ বোধ করছে না।বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিনের নিকট একাধিকবার ফোন দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায় নি বিধায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।উপজেলায় সর্বমোট ৭৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষদেরকে৷ ধারণক্ষমতা রয়েছে ১লক্ষ ১শত জন। তবে যে হারে বন্যার পানির তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতার বাহিরে থাকতে হবে অধিকাংশ মানুষকে।পানি উন্নয়ন বোর্ড,কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন,আমরা বাঁধের কাছে অবস্থান করে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ করছি।নিরাপত্তা প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছে। আমাদের ওয়াটার লেভেল বর্তমানে ডেঞ্জার লেভেল ১১.৩ সেন্টিমিটার অতিক্রম করছে(সংবাদ লিখা পর্যন্ত)।কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গিয়েছে সবকিছু।