প্রিয়ন্ত মজুমদার, স্টাফ রিপোর্টার (মুরাদনগর,কুমিল্লা)
কুমিল্লার মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মানববন্ধন করেছেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।গত সোমবার দুপুরে উপজেলার ১নং শ্রীকাইল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার আনোয়ার হোসেনের বিচারের দাবীতে উত্তর পেন্নই গ্রামে ওই মানববন্ধন করে নির্যাতনের শিকার গ্রামের সর্বস্তরের জনসাধারণ।কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠা ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে রয়েছে ভূমি দখল,মাদক,ইভটিজিং সহ বিভিন্ন অভিযোগ।সে এলাকায় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে জোর পূর্বক মানুষের উপর নির্যাতন নিপীড়ন চালাতো।মানববন্ধনে এ কে এম রাশেদুজ্জামান,মোঃ মনির হোসেন,মোঃ বশির আহাম্মদ বলেন,আনোয়ার নিজে নেতৃত্ব দিয়ে ২০২২ সালের ৩০শে ডিসেম্বর দিবাগত রাতে তার সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর সদস্য মোঃ জালাল মিয়া (২৭), মোঃ জামাল মিয়া (৩০), তারেক মিয়া (২৪), শামীম মিয়া (৩২), কামাল মিয়া (৩৪), শাহাদত হোসেন (৩৬), মানিক মিয়া (৪২), ইব্রাহিম (৩৮), ইমরান (৩৫), আক্কাস মিয়া (৩৮), মহসীন (৩০), কাইয়ুম (৩৩), মনু মিয়া (৬৫), মুজু মিয়া (৭০), হৃদয় (২২) ও ওয়াসিম মিয়া (৪০) মিলে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের উপর আক্রমণ করে। কুপিয়ে আমদের ফেলে গেলে এলাকাবাসী উদ্ধার করে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবস্থান করি।আমাদের স্বজনরা থানায় মামলা করতে বাঙ্গরা বাজার থানায় গেলে ওসি মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে তাই আদালতের দারস্থ হয়ে মামলা দায়ের করি।তখন সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন সহ সকল আসামিরা প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে আমাদের মামলা প্রত্যাহার করতে হুমকি দেয়।তাই প্রাণভয়ে আদালতে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে বাধ্য হই আমরা। ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন আশ্বাস দেয় তিনি সুষ্ঠু বিচার করবেন।বিচার করার পরিবর্তে তিনি পুরস্কার হিসেবে সন্ত্রাসী আনোয়ারকে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি পদে বসায়।বিচার হতে বঞ্চিত হয়ে প্রতিদিন তাদের হুমকি-ধমকির মুখোমুখি হয়েছি।মোঃ দবির মুন্সী,মোঃ কবির মুন্সী,জাহাঙ্গীর আলম,মোবারক হোসেন,আবদুর রহমান,হাবিল ভূইয়া,ফিরোজ মেম্বার,আলমঙ্গীর মেম্বার ও জয়ানাল মিয়া বলেন,তৎকালীন চেয়ারম্যান ও মাদক সম্রাট নজরুল ইসলাম ছিল নির্দয়া সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের ডান হাত।মাদক সম্রাট নজরুলের প্রধান ক্যাডার হলো আনোয়ার মেম্বার।তাই গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জোর পূর্বক ভোট ডাকাতি করে মেম্বার হয়েছে আনোয়ার।তার প্রভাবে এলাকায় যুবসমাজের মাঝে মাদকের নেশা বেড়েছে।পড়ালেখা করতে গেলেও দেওয়া হতো বাঁধা।মাদ্রাসার মেয়েদের রাস্তায় বাজে শব্দে ডাকতো, শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে। তার আওয়ামী সন্ত্রাসী ছেলেরা মানুষের বাড়িতে লুটতরাজ করতো।তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কিছু বললে যে বলবে তার ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের উপর চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন।সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ্ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বক্তারা বলেন, নির্যাতনের শিকার প্রত্যেক পরিবারের পাশে আশ্রয়ের শেষ ঠিকানা হয়ে পাশে ছিল কাজী শাহ্ পরিবার।নির্যাতনের পর একমাত্র তাদের সহযোগিতা পেয়েছে নির্যাতনের শিকার সকল মানুষ।স্বৈরাচার সরকার পতন হবার পূর্বে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচার হতে মুক্তি পায়নি কোনো মানুষ।রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর থেকে সে পলাতক হয়েও রাতের আধারে তাদের বাহিনী ডাকাতির উদ্দেশ্যে গ্রামে চালাতে পারে ভয়ংকর তান্ডবলীলা।প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে, যেকোনো সময় গ্রামে প্রবেশ করে হামলা করবে।তাই প্রচন্ড উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছে গ্রামবাসী ও রাত জেগে পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছে গ্রাম।দ্রুত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা প্রয়োগ করতে প্রশাসনের নিকট দাবি জানায় ভুক্তভোগী জনতা।মানববন্ধন শেষে থানায় অভিযোগ দায়ের করার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সকল ব্যক্তিরা।অভিযোগের বিষয়ে জানতে মেম্বার আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মোঃ শফিউল আলম বলেন, আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।