ঢাকা , শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
বুড়িচংয়ে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কৃষি পূণর্বাসন কর্মসূচী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১২০০ পরিবার পেল ১ মাসের খাদ্য সামগ্রী চৌদ্দগ্রামে শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে কামরুল হুদা’র মতবিনিময় চান্দিনায় ডাকাতের ছুড়িকাঘাতে আহত ৪ ; ৮ ভরি স্বর্ণসহ নগদ টাকা লুট চান্দিনায় অপারেশন থিয়েটার থেকে পালালেন ডাক্তার,প্রসূতির মৃত্যু,৫ লাখ টাকায় রফাদফা বুড়িচংয়ে দশম গ্রেডের দাবিতে শিক্ষকদের বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন বুড়িচং  ময়নামতি ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী দলের জনসভা অনুষ্ঠিত বরুড়াতে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত অ্যাডভোকেট দিদারুল আলম বুড়িচং প্রেসক্লাব রেজি নং ৪০৮ এর উপদেষ্টা নির্বাচিত চৌদ্দগ্রামের জামমুড়ায় সিরাতুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা
নোটিশ :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে, প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা আজই সিভি পাঠিয়ে দিন ইমেইল : cumillabulletin@gmail.com

লাকসামে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস সাইমন হত্যার রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামী গ্রেফতার

 

রবিউল হোসাইন সবুজ, লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস সাইমন (১৭) হত্যার রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামী গ্রেফতার।গত ০৩/০৯/২০২৪খ্রিঃ তারিখ লাকসাম থানাধীন লাকসাম পৌরসভার ০৬নং ওয়ার্ড পশ্চিমগাঁও সাকিনস্থ লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীরের ভিতরে হাসপাতাল ভবনের পশ্চিমে পার্শ্বে অবস্থিত পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের ভিতর খাটের উপর মৃত মোঃ শাহজাহান প্রকাশ সাইমন (১৭) এর মৃতদেহ সাদা কাপড়ে মোড়ানো বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়, মৃতদেহের গলা সামনের অংশ হতে বাম কাঁধের অংশ অর্থাৎ ঘাড় পর্যন্ত কাটা ছিল।কাটা অংশ দিয়ে পঁচা রক্ত,পানি বের হচ্ছিল, নাক-মুখ দিয়ে পঁচা রক্ত, পানি গড়িয়ে পড়ছিল এবং মাথার পিছনে অনুমান ০২ (দুই) ইঞ্চির মত কাটা দাগ ছিল।উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে মৃত মোঃ শাহজাহান প্রকাশ সাইমন (১৭) এর পিতা-আবদুল হান্নান, সাং-কাশিপুর, ৩নং ওয়ার্ড, পোঃ বিপুলাসার, ১১নং বিপুলাসার ইউনিয়ন, থানা-মনোহরগঞ্জ, জেলা-কুমিল্লা বাদী হয়ে লাকসাম খানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৪, তারিখ-০৪/০৯/২০২৪খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার, কুমিল্লা মহোদয়ের দিক নির্দেশনায়, অতিঃ পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও সহঃ পুলিশ সুপার (লাকসাম সার্কেল) এবং অফিসার ইনচার্জ, লাকসাম থানাসহ ফোর্সের সমন্বয়ে হত্যা কান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন পূর্বক আসামী গ্রেফতারের লক্ষ্যে একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়।তারই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তি, সিসিটিভি ফুটেজ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ০৮/০৯/২০২৪খ্রিঃ তারিখ ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানাধীন লোহারব্রীজ এলাকা হতে সকাল ০৯.৩০ ঘটিকার সময় মামলার আসামী ১। আঃ ওয়াদুদ প্রঃ মানিক (২৪), পিতা-আমিনুল ইসলাম প্রঃ দুলাল, মাতা-কুলছুম আক্তার, সাং-গনিপুর (৪নং ওয়ার্ড চেয়ারম্যান বাড়ী), থানা মনোহরগঞ্জ, জেলা-কুমিল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।পরবর্তীতে ধৃত আসামীকে সাথে নিয়ে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়।এতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামী ২। মোঃ সানাউল্লাহ (২৪), পিতা-মৃত নুরু মিয়া, মাতা-মৃত রোকেয়া বেগম, সাং-পশ্চিমগাঁও (পুরান বাজার), ৬নং ওয়ার্ড, থানা-লাকসাম, জেলা-কুমিল্লাকে লাকসাম পুরান বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং ভিকটিমের অটোরিক্সা ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুল ওয়াদুদ প্রকাশ মানিক’কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, গ্রেফতারকৃত অপর আসামী সানাউল্লাহ এবং সে পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে নিয়মিত দেখা সাক্ষ্যৎ ও যোগাযোগ ছিল।ঘটনার কিছুদিন আগে আসামী সানাউল্লাহ মানিকের কাছে জানায় যে, ভিকটিম সাইমনের সাথে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে তার ঝগড়া হয় এবং সাইমন সানাউল্লাহ এর মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।মানিক এবং সানাউল্লাহ ভিকটিম সাইমনকে শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।এই উদ্দেশ্যে ঘটনার ০২ দিন আগে অর্থ্যাৎ ৩১/০৮/২০২৪খ্রিঃ তারিখ সকাল ১১.০০ ঘটিকার সময় সানাউল্লাহ মানিককে নিয়ে বিপুলাসার বাজার এলাকায় যায় এবং দূর থেকে ভিকটিম সাইমনকে দেখায়।ঘটনার দিন সকাল ১১.০০ ঘটিকার দিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী মানিক ভিকটিম সাইমনের অটো রিক্সায় ৫০০ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে বিপুলাসার বাজার হতে লাকসাম সরকারী হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়া দেয়।লাকসাম সরকারী হাসপাতালে মানিক আর সাইমন দুপুর ১২.৩০ ঘটিকার দিকে পৌছায়। সাইমনকে মানিক লাকসাম সরকারী হাসপাতালে গেইটে রেখে হাসপাতালের ভিতরে যায় সানাউল্লাহকে খোঁজার জন্য। মানিক হাসপাতালে ভিতরে গিয়ে দেখি সানাউল্লাহ ভিতরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।সানাউল্লাহর সাথে দেখা করে মানিক গেইটের বাইরে এসে সাইমনকে হাসপাতালের ভিতরে যাওয়ার জন্য বলে। সাইমন মানিকের কথায় হাসপাতলের ভিতরে আসে এই সময় মানিক সাইমনকে জানায় যে,সে মূলত একটি মেয়ের সন্ধানে আসছে এবং তার কিছুটা সময় লাগবে।কিছুক্ষণ পর সানাউল্লাহ তাদের সামনে আসে এবং তাদেরকে হাসাপাতালের ভিতরে অবস্থিত পুরাতন গাড়ির উপর বসতে বলে।এই বলে সানাউল্লাহ হাসপাতালের বাইরে যায় এবং একটুপর ফিরে এসে মানিক এবং ভিকটিম সাইমনকে গাঁজা খাওয়ার অফার দেয় এবং পরবর্তীতে সব মিটমাট করে নেওয়ার কথা বলে।ভিকটিম সানাউল্লার কথায় আশ্বস্ত হয়ে তাদের সাথে হাসপাতালে ভিতরে অবস্থিত পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের দিকে যায়।তারপরে একে একে মানিক,ভিকটিম এবং সানাউল্লাহ পিছনের ভাঙ্গা জানালা দিয়ে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে এবং তারা তিনজন কোয়ার্টারের ভেতরে থাকা চৌকিতে বসে।সানাউল্লাহ উচ্চস্বরে সাইমনকে গালিগালাজ করতে থাকে এবং তার মোবাইল ও অটোর চাবি দেওয়ার জন্য বলে।সানাউল্লাহ এবং ভিকটিমের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হলে মানিক ভিকটিমের কাছ থেকে মোবাইল এবং অটোর চাবি নিয়ে নেয়। সাইমন রুম থেকে বের হওয়ার জন্য পিছনের জানালার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে,সানাউল্লাহ ভিকটিমকে কিল-ঘুষি লাথি মারতে থাকে।একপর্যায়ে সাইমন সানাউল্লাহকে পিছন থেকে চেপে ধরে,এই অবস্থায় মানিক সজোরে একটি কাঠের লাঠি দিয়ে সাইমনের মাথার পেছনে সজোরে আঘাত করে। সাইমন চিৎকার শুরু করে এবং মেঝেতে বসে পড়লে সানাউল্লাহ পকেট থেকে ব্লেড বের করে সাইমনের গলায় পোছ মারে। ঘটনার আকস্মিকতায় মানিক পিছনের জানালা দিয়ে বের হয়ে যায় এবং দ্রুত নিজের কাপড়-ছোপড় খুলে ফেলে এবং পরনে শুধু একটি হাফফ্যান্ট (ফুটবল খেলার জার্সি) রাখে তার মূল উদ্দেশ্যে ছিল মূলত নিজের পরিচয় লুকানো যাতে করে সিসিটিভি ফুটেজে ম্যাচ করানো না যায়।গেইটের বাইরে এসে মানিক সাইমনের অটোর লক খুলে নিজে চালিয়ে লাকসাম উত্তরকূল রোডে একটি মিশুক গ্যারেজে ৩৪,০০০/- টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। আনুমানিক রাত ০৯.০০ টার দিকে মানিক লাকসাম বাইপাস এলাকায় জিআর টেলিকমে সাইমনের মোবাইলের লক খুলে সানাউল্লাহ এর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে প্রথমে লাকসাম পুরাতন বাজার এলাকায় এবং পরবর্তীতে নবাব ফয়জুন্নেসা স্কুলের দিবা গলিতে গিয়ে সানাইল্লাহর দেখা পায়। অটো বিক্রির ১৪,০০০/-টাকা এবং মোবাইল ফোন নেয় মানিক এবং ২০,০০০/-টাকা ভাগে পায় সানাউল্লাহ।মানিক যখন ০২ দিন পর ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারে সাইমন মারা গেছে সে সাইমনের মোবাইল বন্ধ করে দেয়। আঃ ওয়াদুদ প্রঃ মানিক (২৪) গত ০৯/০৯/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী প্রদান করে।মৃতব্যক্তির নাম ও ঠিকানাঃ মোঃ শাহজাহান প্রকাশ সাইমন (১৭), পিতা-আবদুল হান্নান, সাং-কাশিপুর, ৩নং ওয়ার্ড, পোঃ বিপুলাসার, ১১নং বিপুলাসার ইউনিয়ন, থানা-মনোহরগঞ্জ, জেলা-কুমিল্লা।সামীদ্বয়ের নাম ও ঠিকানা:১। আঃ ওয়াদুদ প্রঃ মানিক (২৪), পিতা-আমিনুল ইসলাম প্রঃ দুলাল, মাতা-কুলছুম আক্তার, সাং-গনিপুর (৪নং ওয়ার্ড, চেয়ারম্যান বাড়ী), থানা-মনোহরগঞ্জ, জেলা-কুমিল্লা।২। মোঃ সানাউল্লাহ (২৪), পিতা-মৃত নুরু মিয়া, মাতা-মৃত রোকেয়া বেগম, সাং-পশ্চিমগাঁও (পুরান বাজার), ৬নং ওয়ার্ড, থানা-লাকসাম, জেলা-কুমিল্লা।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

বুড়িচংয়ে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কৃষি পূণর্বাসন কর্মসূচী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

লাকসামে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস সাইমন হত্যার রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামী গ্রেফতার

আপডেট সময় ০১:৪৪:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

রবিউল হোসাইন সবুজ, লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস সাইমন (১৭) হত্যার রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামী গ্রেফতার।গত ০৩/০৯/২০২৪খ্রিঃ তারিখ লাকসাম থানাধীন লাকসাম পৌরসভার ০৬নং ওয়ার্ড পশ্চিমগাঁও সাকিনস্থ লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীরের ভিতরে হাসপাতাল ভবনের পশ্চিমে পার্শ্বে অবস্থিত পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের ভিতর খাটের উপর মৃত মোঃ শাহজাহান প্রকাশ সাইমন (১৭) এর মৃতদেহ সাদা কাপড়ে মোড়ানো বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়, মৃতদেহের গলা সামনের অংশ হতে বাম কাঁধের অংশ অর্থাৎ ঘাড় পর্যন্ত কাটা ছিল।কাটা অংশ দিয়ে পঁচা রক্ত,পানি বের হচ্ছিল, নাক-মুখ দিয়ে পঁচা রক্ত, পানি গড়িয়ে পড়ছিল এবং মাথার পিছনে অনুমান ০২ (দুই) ইঞ্চির মত কাটা দাগ ছিল।উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে মৃত মোঃ শাহজাহান প্রকাশ সাইমন (১৭) এর পিতা-আবদুল হান্নান, সাং-কাশিপুর, ৩নং ওয়ার্ড, পোঃ বিপুলাসার, ১১নং বিপুলাসার ইউনিয়ন, থানা-মনোহরগঞ্জ, জেলা-কুমিল্লা বাদী হয়ে লাকসাম খানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৪, তারিখ-০৪/০৯/২০২৪খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার, কুমিল্লা মহোদয়ের দিক নির্দেশনায়, অতিঃ পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও সহঃ পুলিশ সুপার (লাকসাম সার্কেল) এবং অফিসার ইনচার্জ, লাকসাম থানাসহ ফোর্সের সমন্বয়ে হত্যা কান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন পূর্বক আসামী গ্রেফতারের লক্ষ্যে একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়।তারই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তি, সিসিটিভি ফুটেজ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ০৮/০৯/২০২৪খ্রিঃ তারিখ ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানাধীন লোহারব্রীজ এলাকা হতে সকাল ০৯.৩০ ঘটিকার সময় মামলার আসামী ১। আঃ ওয়াদুদ প্রঃ মানিক (২৪), পিতা-আমিনুল ইসলাম প্রঃ দুলাল, মাতা-কুলছুম আক্তার, সাং-গনিপুর (৪নং ওয়ার্ড চেয়ারম্যান বাড়ী), থানা মনোহরগঞ্জ, জেলা-কুমিল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।পরবর্তীতে ধৃত আসামীকে সাথে নিয়ে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়।এতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামী ২। মোঃ সানাউল্লাহ (২৪), পিতা-মৃত নুরু মিয়া, মাতা-মৃত রোকেয়া বেগম, সাং-পশ্চিমগাঁও (পুরান বাজার), ৬নং ওয়ার্ড, থানা-লাকসাম, জেলা-কুমিল্লাকে লাকসাম পুরান বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং ভিকটিমের অটোরিক্সা ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুল ওয়াদুদ প্রকাশ মানিক’কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, গ্রেফতারকৃত অপর আসামী সানাউল্লাহ এবং সে পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে নিয়মিত দেখা সাক্ষ্যৎ ও যোগাযোগ ছিল।ঘটনার কিছুদিন আগে আসামী সানাউল্লাহ মানিকের কাছে জানায় যে, ভিকটিম সাইমনের সাথে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে তার ঝগড়া হয় এবং সাইমন সানাউল্লাহ এর মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।মানিক এবং সানাউল্লাহ ভিকটিম সাইমনকে শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।এই উদ্দেশ্যে ঘটনার ০২ দিন আগে অর্থ্যাৎ ৩১/০৮/২০২৪খ্রিঃ তারিখ সকাল ১১.০০ ঘটিকার সময় সানাউল্লাহ মানিককে নিয়ে বিপুলাসার বাজার এলাকায় যায় এবং দূর থেকে ভিকটিম সাইমনকে দেখায়।ঘটনার দিন সকাল ১১.০০ ঘটিকার দিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী মানিক ভিকটিম সাইমনের অটো রিক্সায় ৫০০ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে বিপুলাসার বাজার হতে লাকসাম সরকারী হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়া দেয়।লাকসাম সরকারী হাসপাতালে মানিক আর সাইমন দুপুর ১২.৩০ ঘটিকার দিকে পৌছায়। সাইমনকে মানিক লাকসাম সরকারী হাসপাতালে গেইটে রেখে হাসপাতালের ভিতরে যায় সানাউল্লাহকে খোঁজার জন্য। মানিক হাসপাতালে ভিতরে গিয়ে দেখি সানাউল্লাহ ভিতরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।সানাউল্লাহর সাথে দেখা করে মানিক গেইটের বাইরে এসে সাইমনকে হাসপাতালের ভিতরে যাওয়ার জন্য বলে। সাইমন মানিকের কথায় হাসপাতলের ভিতরে আসে এই সময় মানিক সাইমনকে জানায় যে,সে মূলত একটি মেয়ের সন্ধানে আসছে এবং তার কিছুটা সময় লাগবে।কিছুক্ষণ পর সানাউল্লাহ তাদের সামনে আসে এবং তাদেরকে হাসাপাতালের ভিতরে অবস্থিত পুরাতন গাড়ির উপর বসতে বলে।এই বলে সানাউল্লাহ হাসপাতালের বাইরে যায় এবং একটুপর ফিরে এসে মানিক এবং ভিকটিম সাইমনকে গাঁজা খাওয়ার অফার দেয় এবং পরবর্তীতে সব মিটমাট করে নেওয়ার কথা বলে।ভিকটিম সানাউল্লার কথায় আশ্বস্ত হয়ে তাদের সাথে হাসপাতালে ভিতরে অবস্থিত পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের দিকে যায়।তারপরে একে একে মানিক,ভিকটিম এবং সানাউল্লাহ পিছনের ভাঙ্গা জানালা দিয়ে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে এবং তারা তিনজন কোয়ার্টারের ভেতরে থাকা চৌকিতে বসে।সানাউল্লাহ উচ্চস্বরে সাইমনকে গালিগালাজ করতে থাকে এবং তার মোবাইল ও অটোর চাবি দেওয়ার জন্য বলে।সানাউল্লাহ এবং ভিকটিমের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হলে মানিক ভিকটিমের কাছ থেকে মোবাইল এবং অটোর চাবি নিয়ে নেয়। সাইমন রুম থেকে বের হওয়ার জন্য পিছনের জানালার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে,সানাউল্লাহ ভিকটিমকে কিল-ঘুষি লাথি মারতে থাকে।একপর্যায়ে সাইমন সানাউল্লাহকে পিছন থেকে চেপে ধরে,এই অবস্থায় মানিক সজোরে একটি কাঠের লাঠি দিয়ে সাইমনের মাথার পেছনে সজোরে আঘাত করে। সাইমন চিৎকার শুরু করে এবং মেঝেতে বসে পড়লে সানাউল্লাহ পকেট থেকে ব্লেড বের করে সাইমনের গলায় পোছ মারে। ঘটনার আকস্মিকতায় মানিক পিছনের জানালা দিয়ে বের হয়ে যায় এবং দ্রুত নিজের কাপড়-ছোপড় খুলে ফেলে এবং পরনে শুধু একটি হাফফ্যান্ট (ফুটবল খেলার জার্সি) রাখে তার মূল উদ্দেশ্যে ছিল মূলত নিজের পরিচয় লুকানো যাতে করে সিসিটিভি ফুটেজে ম্যাচ করানো না যায়।গেইটের বাইরে এসে মানিক সাইমনের অটোর লক খুলে নিজে চালিয়ে লাকসাম উত্তরকূল রোডে একটি মিশুক গ্যারেজে ৩৪,০০০/- টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। আনুমানিক রাত ০৯.০০ টার দিকে মানিক লাকসাম বাইপাস এলাকায় জিআর টেলিকমে সাইমনের মোবাইলের লক খুলে সানাউল্লাহ এর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে প্রথমে লাকসাম পুরাতন বাজার এলাকায় এবং পরবর্তীতে নবাব ফয়জুন্নেসা স্কুলের দিবা গলিতে গিয়ে সানাইল্লাহর দেখা পায়। অটো বিক্রির ১৪,০০০/-টাকা এবং মোবাইল ফোন নেয় মানিক এবং ২০,০০০/-টাকা ভাগে পায় সানাউল্লাহ।মানিক যখন ০২ দিন পর ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারে সাইমন মারা গেছে সে সাইমনের মোবাইল বন্ধ করে দেয়। আঃ ওয়াদুদ প্রঃ মানিক (২৪) গত ০৯/০৯/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী প্রদান করে।মৃতব্যক্তির নাম ও ঠিকানাঃ মোঃ শাহজাহান প্রকাশ সাইমন (১৭), পিতা-আবদুল হান্নান, সাং-কাশিপুর, ৩নং ওয়ার্ড, পোঃ বিপুলাসার, ১১নং বিপুলাসার ইউনিয়ন, থানা-মনোহরগঞ্জ, জেলা-কুমিল্লা।সামীদ্বয়ের নাম ও ঠিকানা:১। আঃ ওয়াদুদ প্রঃ মানিক (২৪), পিতা-আমিনুল ইসলাম প্রঃ দুলাল, মাতা-কুলছুম আক্তার, সাং-গনিপুর (৪নং ওয়ার্ড, চেয়ারম্যান বাড়ী), থানা-মনোহরগঞ্জ, জেলা-কুমিল্লা।২। মোঃ সানাউল্লাহ (২৪), পিতা-মৃত নুরু মিয়া, মাতা-মৃত রোকেয়া বেগম, সাং-পশ্চিমগাঁও (পুরান বাজার), ৬নং ওয়ার্ড, থানা-লাকসাম, জেলা-কুমিল্লা।