ইয়াছিন আরাফাত, স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ৯নং মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ্ সেলিম প্রধান অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরই মধ্যে ওই ইউনিয়নে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতাসহ দায়িত্ব পেয়েছেন প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আবুল বাশার। তিনি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার।মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠি চান্দিনা উপজেলায় পৌঁছালে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। গত সোমবার ওই চিঠি স্বাক্ষর করেন জেলা প্রশাসক। স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখা এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের পৃথক নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতির কারণে জনসেবাসহ সার্বিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।এদিকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির ভুল তথ্য দিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আবুল বাশার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।বাসায় চিকিৎসাধীন অসুস্থ সেলিম প্রধান চেয়ারম্যান এই প্রতিবেদককে জানান, শারিরিক অসুস্থ অনুভব করলে তিনি গত ১৭ আগস্ট চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এসময় ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। ১৮ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বারদের সাথে একটি সভা করে রেজুলেশনের মাধ্যমে নিয়মানুযায়ী ছুটি নেন তিনি। সভায় উপস্থিত মেম্বারদের সর্বসম্মতিক্রমে ওই ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ফাতেমা বেগমকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।ছুটির আবেদন, রেজুলেশনের কপিসহ এই পুরো পক্রিয়াটি লিখিতভাবে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়। এছাড়া বিষয়টি কুমিল্লার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালককেও আবেদনের মাধ্যমে অবহিত করা হয়। যার রিসিভ কপিও চেয়ারম্যানের নিকট রয়েছে।এদিকে শাহ্ সেলিম প্রধান অভিযোগ করেন- সভায় প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মো. জহিরুল ইসলাম যিনি ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার এবং প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আবুল বাশার যিনি ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার তারা দুইজনও উপস্থিত ছিলেন। সেদিন তারা দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমরা সবার সম্মতিতেই মহিলা মেম্বার ফাতেমা বেগমকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমার অনুপস্থিতির ভুল তথ্য দিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আবুল বাশার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহ সেলিম প্রধান চেয়ারম্যান অসুস্থ হয়ে মতলবে আইসিডিডিআরবি, কুমিল্লা ডায়াবেটিক হাসপাতাল এবং ধানমন্ডি জেনারেল এন্ড কিডনী হসপিটালে পৃথক সময়ে পৃথক চিকিৎসার জন্য ভর্তি ছিলেন। বর্তমানে তিনি ডাক্তারের পরামর্শে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন।এছাড়া ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এবছরের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্স সহ যাবতীয় হিসাব নিকাশ মেম্বারদের ভাতার হিসাব নিকাশ বুঝে নিয়ে তারা চেয়ারম্যানকে একটি প্রত্যয়নপত্রও দিয়েছিলেন। চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাবের মো. সোয়াইব বিষয়টি অবহিত আছেন।এবিষয়ে ৯নং মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আবুল বাশার জানান, ‘অপসারিত চিঠি যখন এটি বিভাগীয় পর্যায়ে চলে গেছে তখন তিনি ছুটি নিয়েছেন। আমরা এটি সঠিক বলে মনে করি না। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আমিসহ ১০ জন মেম্বর ওনার অনুপস্থিতির বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি।’