ইয়াছিন আরাফাত, স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লার চান্দিনায় টিসিবি’র ভোগ্যপণ্য বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলার ৯নং মাইজখার ইউনিয়নে টিসিবি’র পণ্য বিক্রয় করা হয়। এসময় নির্ধারিত সুলভ মূল্য কার্ডধারীদের বাদ দিয়ে ইচ্ছে মতো নিজেদের পছন্দের মানুষকে পণ্য বিতরণ করেন স্থানীয় বহিরাগত প্রভাবশালী কতিপয় লোকজন। স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে বিতরণ করার নিয়ম থাকলেও সেই নিয়ম অনুযায়ী তালিকাভুক্তদের দেওয়া হয়নি তেল, ডাল ও চাল। ট্যাগ অফিসার, পুলিশ অফিসারের অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশারকে অবহিত না করে, ডিলার এবং সংশ্লিষ্টরা এমন অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।সরেজমিনে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সুবিধাভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তালিকা অনুযায়ী তারা দীর্ঘদিন থেকেই টিসিবি’র পণ্য ক্রয় করে আসছেন। শনিবার সকালে এসে শুনতে পান টিসিবি’র সুলভ মূল্য কার্ড রেখে দিচ্ছেন একটি দলের স্থানীয় কিছু রাজনীতিক কর্মী। তারা নিজেদের পছন্দ মতো লোকজনকে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ করছেন। যেটা নিয়ম বহির্ভূত।মেহার গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী (পঙ্গু) অহিদুর রহমান অভিযোগ করেন- তিনি টিসিবি’র কার্ডধারী। সকালে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে স্থানীয় কয়েকজন তার কার্ড রেখে তাকে পণ্য না দিয়ে বিদায় করেছেন।একই গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে মো. সফিক অভিযোগ করেন- ‘আমার কার্ড ফেরত দিয়েছে বিতরণকারীরা এবং আমাকে মাল দিবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে তারা।’এব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার বলেন- ৯ সেপ্টেম্বর আমাকে প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১১ সেপ্টেম্বর আমাদের প্রথম মিটিং হয়।বিকেলে স্থানীয় কতিপয় দুর্বৃত্ত ও ছাত্র নামধারীরা ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুঁলিয়ে দেয়। ইউএনও কে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পরিদর্শনে আসবেন বলে জানিয়েছে।সে পর্যন্ত তালা যাতে কেউ না খুলে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু হিসাব সহকারী কামরুল ইসলাম আমার সাথে পরামর্শ না করে দুর্বৃত্তদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে তালা খুলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। টিসিবি’র পণ্য কে গ্রহণ করলো, কে বিতরণ করছে আমি কিছুই জানিনা।তিনি আরও বলেন- সুবিধা ভোগীদের কাছ থেকে কার্ড রেখে দিয়েছেন বলে অনেকেই আমাকে জানিয়েছেন। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর টিসিবি’র মালামাল এবং চাউল আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ করেছেন দুষ্কৃতকারীরা।এব্যাপারে টিসিবি’র ডিলার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন- ‘মানুষ বেশি বলে বিতরণের সুবিধার্থে সময় বাঁচাতে কার্ড রেখে দেওয়া হচ্ছে। এগুলোতে সিল, স্বাক্ষর দিয়ে পরে আবার সুবিধাভোগীদের কাছে ফেরত পাঠানো হবে।’ চেয়ারম্যানের সাথে তার লোকজন যোগাযোগ করেছেন এবং বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসারও ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন।এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন জনান, আমি খবর পেয়েছি। নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।