
ইয়াছিন আরাফাত, স্টাফ রিপোর্টার
মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত টানা ৬মাসের বৃষ্টিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন।শরৎ এর শেষ দিকে এসে টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ফসলী মাঠ, রাস্তা-ঘাট এমনকি বিভিন্ন স্কুলের খেলার মাঠ।চারদিকের জলাবদ্ধতায় যেন বন্যার স্বরূপ দেখছে উপজেলাবাসী।পানিতে টইটুম্বুর খাল-বিল, পুকুর সহ সকল জলাশয়।পানি বেড়ে খাল-বিলের সাথে একাকার হয়ে গেছে ফসলী মাঠ।এখন তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট ও স্কুলের মাঠ।এ পর্যন্ত উপজেলার ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি জমে থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।এর মধ্যে ৪টি প্রতিষ্ঠানই উপজেলা সদরে।পানিতে তলিয়ে আছে উপজেলা সদরের চান্দিনা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ,চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ,চান্দিনা আল-আমিন ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা মাঠ,মহারং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ,মুরাদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ,পিপুইয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ,নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ,বিচুইন্দাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ও দারোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ।জলাবদ্ধতার এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছেন অপরিকল্প আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ,ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত না করা,নিষেধাজ্ঞ উপেক্ষা করে অবাধে পুকুর ভরাট,নিয়মিত খাল খনন না করা,নিয়ম নীতি না মেনে খালের উপর স্থাপনা তৈরি, যত্রতত্র খালে বাঁধ দেয়া,খালের উপর ব্রীজ,কালভার্ট নির্মাণ, খাল ভরাট,ফসলি জমিতে বাধ দিয়ে মাছ চাষে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় বলে মনে করেন সচেতন মহল।চান্দিনা উপজেলার ছয়ঘড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আলী হোসেন জানান- সরকারি নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে অবাধে খালে বাধ, পুকুর ভরাট করার ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় পানি উঠেছে উঠানে।কিন্তু ২/৪ দিনের মধ্যেই পানি নেমে গেছে।এখন বৃষ্টির পানিই যাওয়ার তেমন জায়গা নেই।আগে পুকুরের পানি খাল হয়ে বাহির হয়ে যেতো।এখন খাল থেকে উল্টো পুকুরে পানি ঢুকছে!জলাবদ্ধতা নিরসনে নির্বিঘ্নে পানি চলাচলের পথ নিশ্চিত করা হবে প্রধান লক্ষ্য।চান্দিনা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাহিম জানায়,স্কুল ড্রেসের সাথে কেডস পড়তে হয়।কিন্তু মাঠে জমে থাকা পানিতে কেডসও ভিজে যায়।সামান্য বৃষ্টিতেই আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকায় আমরা ক্লাসে প্রবেশ করতে সমস্যা হচ্ছে।এমনকি মাঠে একটু খেলাধুলাও করতে পারছি না।ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কাউছারুজ্জামান জানান, পাশের পুকুরের পানি বাড়লেই ওই পানি উল্টো বিদ্যালয়ের মাঠে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।পাশ্ববর্তী ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় এ সমস্যা কাটছে না।বিদ্যালয় মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকরাও নানা সমস্যায় সন্মুখীন হচ্ছে।চান্দিনা আল-আমিন কামিল মাদ্রাসার প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা মাহবুবুর রহমান আশরাফী জানান, মাদ্রাসার মাঠের পানি নিস্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এবং চারপাশে অনেক ভবন গড়ে উঠায় আমাদের মাদ্রাসার মাঠটি তুলনা মূলক অনেক নিচু অবস্থায় আছে।এ অবস্থায় মাঠে মাটি ফেলাসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও চান্দিনা পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক নাজিয়া হোসেন জানান,স্কুল মাঠে জলাবদ্ধতা শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সকলের জন্যই দুর্ভোগের কারণ।বিষয়টি যেহেতু আমার নজরে এসেছে, আর যাতে এ সমস্যায় ভূগতে না হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।