এন.সি জুয়েল, কুমিল্লা ব্যুরো চীফ
কুমিল্লা নগরীতে চার বছর আগের সহিংসতার শঙ্কা কাটিয়ে দুর্গাপূজার আনন্দে মেতে উঠছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।শারদীয় এ উৎসব উপলক্ষে মণ্ডপগুলোয় উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। নগরীতে প্রতিমা তৈরি হয়, এমন দুটি কালীবাড়িতেও দেখা গেছে কারিগরদের ব্যস্ততা।এ বছর জেলায় ৭৯১টি এবং নগরীতে ৬৯টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব পালন শুরু হচ্ছে।নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে সার্বক্ষণিক আনসার সদস্য ও নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েনসহ সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি করা হচ্ছে।এ বছরই প্রথম মাঠে থাকছে সেনাবাহিনী।এ ছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দারা নাশকতা ঠেকাতে দায়িত্ব পালন করছেন।জেলা প্রশাসক সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর দুর্গাপূজার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।প্রতিবছর দুর্গাপূজায় ওই সহিংসতার বিষয়টি আলোচনায় আসে।নগরীর অধিকাংশ প্রতিমা তৈরি করা হয় কান্দিরপাড় কালীবাড়ি এবং ঠাকুরপাড়া (বটগাছ তলা) মন্দিরে।সোমবার দুটি মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, সেখান থেকে তৈরি করা বিভিন্ন প্রতিমা সরবরাহ করা হচ্ছে।ঠাকুরপাড়া মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সাহা বলেন, স্থানীয় প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।নানুয়ারদিঘির উত্তর পাড়ে তৈরি যে অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ থেকে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল, সেখানে গিয়ে দেখা যায় কুমিল্লা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য দাস টিটু মণ্ডপের অস্থায়ী প্যান্ডেল তৈরির কাজের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।তিনি বলেন, প্রতিমা কান্দিরপাড় কালীবাড়িতে তৈরি করা আছে।সময়মতো এনে স্থাপন করা হবে।সেদিন নগরীর কাপড়িয়াপট্টি চান্দমনি রক্ষা কালীমন্দিরেও হামলা-ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনা ঘটে।সেখানে গিয়েও দেখা যায়,দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি।আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।পুরোহিত অমর চক্রবর্তী ও জীবনচন্দ্র ভৌমিক বলেন, এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের বাড়তি তৎপরতা দেখতে পাচ্ছি।জেলা আনসার কমান্ডার মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন,অধিক গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে আটজন এবং সাধারণ পূজামণ্ডপে ছয়জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।সীমান্তের উপজেলাগুলোয় মণ্ডপে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানান কুমিল্লার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোঃ রেজাউল কবির।তিনি বলেন,উৎসবের পূজা যেন উৎকণ্ঠায় পরিণত না হয়,বিজিবি সীমান্ত নিরাপত্তার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়েও তা নিশ্চিত করবে।সীমান্ত এলাকায় ১২২টি মণ্ডপে ৮২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়ছার বলেন,পূজার আনন্দ যেন কোনো অপশক্তি ম্লান করতে না পারে, সে জন্য আইন প্রয়োগ সংস্থার সদস্যরা মাঠে সর্বোচ্চ নজরদারি চালাচ্ছেন।কোনো মহল ষড়যন্ত্র করলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।