ঢাকা , রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩, আহত ৫ চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জায়গা নাঙ্গলকোটের মাটিতে হবে না : জনসভায় গফুর ভুঁইয়া চৌদ্দগ্রামে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা দেয়ায় প্রবাসীর উপর সন্ত্রাসী হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন চৌদ্দগ্রামে করপাটি আইডিয়াল স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে দোয়া-মিলাদ ও আলোচনা সভা কুমিল্লা বিমানবন্দর পুনরায় চালুর দাবি: ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণে প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ চতুর্থবারের মতো রিক্রিয়েশন সাব কমিটির সদস্য মনোনীত হয়েছেন এড. তাপস কুমিল্লায় যাকাত ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার যাকাত প্রদান চৌদ্দগ্রামে প্রবাস ফেরৎ সোলায়মান হাজারীর কৃষিতে ব্যাপক সফলতা অর্জন হারানো বিজ্ঞপ্তি
নোটিশ :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে, প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা আজই সিভি পাঠিয়ে দিন ইমেইল : cumillabulletin@gmail.com

বিশ্ব শান্তি কামনায় কুমিল্লায় রাখের ব্রত ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত

 

 

তাপস চন্দ্র সরকার, স্টাফ রিপোর্টার

বিশ্ব শান্তি ও রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আরাধনা করেন লোকনাথ ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা।১২ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর মন্দিরের সামনে হাজারো নর-নারী ঘৃত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। উলুধ্বনির মধ্যদিয়ে লোকনাথ ভক্তরা সবাই একযোগে জ্বালতে শুরু করে প্রদীপ।তাদের বিশ্বাস, কার্তিক মাসের শেষ সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার সারাদিন রাখের উপবাস বা কার্তিক ব্রত বা গোসাইর উপবাস করে ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আরাধনা করলে অশান্তি, রোগ-বালাই ও অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে। এ বিশ্বাসে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি মাটিতে বসে সামনে ঘৃত প্রদীপ, ফুল, ফল রেখে একাগ্রচিত্তে প্রার্থনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এদিন হাজারো প্রদীপের আলো ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। পূজা শেষে পাশ্ববর্তী পুকুরে লোকনাথ ব্রহ্মচারীকে উৎসর্গ করে সেই প্রদীপ ভাসিয়ে দেওয়া হয়।জানা যায়- দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে বাঁচতে কার্তিক মাসে উপবাস পালনের পাশাপাশি আশ্রমে প্রদীপ ও ধূপ জ্বালাতে বলেছিলেন বাবা লোকনাথ। সেই থেকে তার ভক্তরা প্রতি বছর কার্তিক মাসের শেষার্ধে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার জড়ো হন বাবা লোকনাথের আশ্রমে, প্রদীপ জ্বেলে দিয়ে প্রার্থনা করেন বিপদ-আপদ ও রোগবালাই থেকে মুক্তির। সেই প্রার্থনাই পরিচিত ‘রাখের উপবাস’ বা ‘কার্তিক ব্রত’ নামে। কেউ কেউ ‘গোসাইর উপবাস’ বা ‘ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বালন’ উৎসব বলেও ডাকেন।মহেশাঙ্গণ শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক হারাধন ভৌমিক জানান- দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে মহেশাঙ্গণে রাখের উপবাস ও ঘৃত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন উৎসব পালিত হচ্ছে।উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক স্বপন কুমার দাস জানান- এবারের ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে প্রার্থনা করা হয়েছে। সবাই যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারেন– ঈশ্বরের কাছে এমন অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন ভক্তরা।এদিকে, শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সিনিয়র সদস্য এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার বলেন, বিপদ-আপদ আর রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা পেতে কার্তিক মাসে উপবাস পালন আর প্রদীপ জ্বালাতে বলেছিলেন শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী। প্রিয়জনের মঙ্গল কামনায় সেই থেকে কার্তিক মাসের শেষ ১৫ দিনের শনি ও মঙ্গলবার উপবাস পালন শেষে প্রদীপ আর ধুপ জ্বেলে প্রার্থনায় শামিল হন লোকনাথ ভক্ত অগুনতি সনাতন ধর্মাবলম্বী। কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে সমবেত হয়েছিলেন হাজারো পুণ্যার্থী।শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র দাস বলেন- প্রতি বছর ঘটা করে পালন করা হয় রাখের উপবাস। কেবল কুমিল্লা নয়, পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ত্রিপুরা থেকেও লোকনাথ ভক্তরা এই উৎসবে যোগ দিতে ছুটে আসেন মহেশাঙ্গণে। প্রতি বছর কার্তিকের শেষ ১৫ দিনে শনি ও মঙ্গলবার করে পালন করা হয় রাখের উপবাস। এই উৎসবে যোগ দিতে ভক্তরা প্রদীপ হাতে জড়ো হন মহেশাঙ্গণে। প্রদীপ ও ধূপ জ্বালিয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন রোগ-শোক বিপৎমুক্তির। প্রার্থনা করেন নিজেদের জন্য, পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের জন্য। বাড়ি থেকে আনা ফলমূল নিয়ে সন্ধ্যা নামার আগে সারিবদ্ধভাবে মহেশাঙ্গণ ঘিরে বসতে শুরু করেন পুণ্যার্থীরা। সামনে কলাপাতার ওপর রাখা হয় ঘিয়ের প্রদীপ। যে কয়জন আপনজনের জন্য প্রার্থনা করা হয়, গুনে গুনে সেই কটি প্রদীপ সামনে রাখেন ভক্তরা। অপেক্ষায় থাকেন সূর্য ডোবার। সূর্যাস্ত হলেই বেজে ওঠে ঘণ্টা। উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে লোকনাথ ভক্তরা সবাই একযোগে জ্বালতে শুরু করে প্রদীপ। একসঙ্গে জ্বলে ওঠে শত শত প্রদীপ। অন্ধকার ফুঁড়ে যেন আলোর ধারা বয়ে যায় গোটা এলাকায়। প্রার্থনাধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মহেশাঙ্গণ। প্রদীপের আগুনে অন্ধকার ভেদ করে জ্বলে ওঠে আলোর রেখা।চারদিকে ধূপের ধোঁয়া ও প্রদীপের আলোয় এক অপার্থিব আবহ তৈরি হয় মহেশাঙ্গণে ।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩, আহত ৫

বিশ্ব শান্তি কামনায় কুমিল্লায় রাখের ব্রত ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় ০৭:৫০:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

 

 

তাপস চন্দ্র সরকার, স্টাফ রিপোর্টার

বিশ্ব শান্তি ও রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আরাধনা করেন লোকনাথ ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা।১২ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর মন্দিরের সামনে হাজারো নর-নারী ঘৃত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। উলুধ্বনির মধ্যদিয়ে লোকনাথ ভক্তরা সবাই একযোগে জ্বালতে শুরু করে প্রদীপ।তাদের বিশ্বাস, কার্তিক মাসের শেষ সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার সারাদিন রাখের উপবাস বা কার্তিক ব্রত বা গোসাইর উপবাস করে ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আরাধনা করলে অশান্তি, রোগ-বালাই ও অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে। এ বিশ্বাসে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি মাটিতে বসে সামনে ঘৃত প্রদীপ, ফুল, ফল রেখে একাগ্রচিত্তে প্রার্থনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এদিন হাজারো প্রদীপের আলো ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। পূজা শেষে পাশ্ববর্তী পুকুরে লোকনাথ ব্রহ্মচারীকে উৎসর্গ করে সেই প্রদীপ ভাসিয়ে দেওয়া হয়।জানা যায়- দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে বাঁচতে কার্তিক মাসে উপবাস পালনের পাশাপাশি আশ্রমে প্রদীপ ও ধূপ জ্বালাতে বলেছিলেন বাবা লোকনাথ। সেই থেকে তার ভক্তরা প্রতি বছর কার্তিক মাসের শেষার্ধে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার জড়ো হন বাবা লোকনাথের আশ্রমে, প্রদীপ জ্বেলে দিয়ে প্রার্থনা করেন বিপদ-আপদ ও রোগবালাই থেকে মুক্তির। সেই প্রার্থনাই পরিচিত ‘রাখের উপবাস’ বা ‘কার্তিক ব্রত’ নামে। কেউ কেউ ‘গোসাইর উপবাস’ বা ‘ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বালন’ উৎসব বলেও ডাকেন।মহেশাঙ্গণ শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক হারাধন ভৌমিক জানান- দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে মহেশাঙ্গণে রাখের উপবাস ও ঘৃত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন উৎসব পালিত হচ্ছে।উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক স্বপন কুমার দাস জানান- এবারের ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে প্রার্থনা করা হয়েছে। সবাই যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারেন– ঈশ্বরের কাছে এমন অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন ভক্তরা।এদিকে, শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সিনিয়র সদস্য এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার বলেন, বিপদ-আপদ আর রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা পেতে কার্তিক মাসে উপবাস পালন আর প্রদীপ জ্বালাতে বলেছিলেন শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী। প্রিয়জনের মঙ্গল কামনায় সেই থেকে কার্তিক মাসের শেষ ১৫ দিনের শনি ও মঙ্গলবার উপবাস পালন শেষে প্রদীপ আর ধুপ জ্বেলে প্রার্থনায় শামিল হন লোকনাথ ভক্ত অগুনতি সনাতন ধর্মাবলম্বী। কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে সমবেত হয়েছিলেন হাজারো পুণ্যার্থী।শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র দাস বলেন- প্রতি বছর ঘটা করে পালন করা হয় রাখের উপবাস। কেবল কুমিল্লা নয়, পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ত্রিপুরা থেকেও লোকনাথ ভক্তরা এই উৎসবে যোগ দিতে ছুটে আসেন মহেশাঙ্গণে। প্রতি বছর কার্তিকের শেষ ১৫ দিনে শনি ও মঙ্গলবার করে পালন করা হয় রাখের উপবাস। এই উৎসবে যোগ দিতে ভক্তরা প্রদীপ হাতে জড়ো হন মহেশাঙ্গণে। প্রদীপ ও ধূপ জ্বালিয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন রোগ-শোক বিপৎমুক্তির। প্রার্থনা করেন নিজেদের জন্য, পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের জন্য। বাড়ি থেকে আনা ফলমূল নিয়ে সন্ধ্যা নামার আগে সারিবদ্ধভাবে মহেশাঙ্গণ ঘিরে বসতে শুরু করেন পুণ্যার্থীরা। সামনে কলাপাতার ওপর রাখা হয় ঘিয়ের প্রদীপ। যে কয়জন আপনজনের জন্য প্রার্থনা করা হয়, গুনে গুনে সেই কটি প্রদীপ সামনে রাখেন ভক্তরা। অপেক্ষায় থাকেন সূর্য ডোবার। সূর্যাস্ত হলেই বেজে ওঠে ঘণ্টা। উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে লোকনাথ ভক্তরা সবাই একযোগে জ্বালতে শুরু করে প্রদীপ। একসঙ্গে জ্বলে ওঠে শত শত প্রদীপ। অন্ধকার ফুঁড়ে যেন আলোর ধারা বয়ে যায় গোটা এলাকায়। প্রার্থনাধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মহেশাঙ্গণ। প্রদীপের আগুনে অন্ধকার ভেদ করে জ্বলে ওঠে আলোর রেখা।চারদিকে ধূপের ধোঁয়া ও প্রদীপের আলোয় এক অপার্থিব আবহ তৈরি হয় মহেশাঙ্গণে ।