ঢাকা , রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
দাউদকান্দিতে বাল্যবিয়ে ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সাংস্কৃতিক সমাবেশ চৌদ্দগ্রামের “মিয়া বাজার কাঁকড়ী ক্লাব” এর দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত কুমিল্লা নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করতে সেনাবাহিনীর অভিযান চান্দিনায় বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুমিল্লা নগরীর ১৫নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত মাদকমুক্ত সমাজ: স্লোগানে নয়, বাস্তবতায় প্রয়োজন পরিবর্তন — মো. রাসেল আহমেদ (রাফি) শিশুকে ডোবায় ফেলে শিক্ষক বললেন, ‘আমার কাছে মানুষের চেয়ে বালির মূল্য বেশি’ না ফেরার দেশে চলে গেলেন শতবর্ষী বৃদ্ধা যদুলাল বাইন চৌদ্দগ্রামে চিওড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র কোমাড়ডোগা গ্রাম কমিটি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
নোটিশ :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে, প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা আজই সিভি পাঠিয়ে দিন ইমেইল : cumillabulletin@gmail.com

চান্দিনায় উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে অবৈধ ভেকু জব্দ, স্কুল শিক্ষককে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা

 

ইয়াছিন আরাফাত, স্টাফ রিপোর্টার

কুমিল্লার চান্দিনায় উপজেলা প্রশাসন এর অভিযানে এক অবৈধ মাটি কাটার ভেকু জব্দ ও স্কুল শিক্ষক কে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা।শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি)সকালে চান্দিনা উপজেলা প্রশাসন এর অভিযানে মাইজখার ইউনিয়ন এর পানিপাড়া গ্রামের নাজমুল মিয়ার ছেলে ভোমরকান্দি হাইস্কুলের আরবী শিক্ষক এমরান কে অবৈধ ভাবে ভেকু দিয়ে ফসলি জমি কাটার অপরাধে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা ও একটি ভেকু জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিয়া হোসেন,সহযোগীতায় ছিলেন চান্দিনা থানা পুলিশ, আনসার ও সঙ্গীয় ফোর্স।এ বিষয় এলাকা বাসী জানায়, পানিপাড়া গ্রামের নাজমুল মিয়ার ছেলে এমরান সে পেশায় একজন হাইস্কুলের আরবী শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম হয়ে কিভাবে দীর্ঘদিন যাবত আশেপাশের জমি নষ্ট করে অবৈধ ভাবে মাটি বিক্রি করে আসছে তাকে এলাকার লোকজন বাঁধা দিলেও সে কারো কথায় কর্ণপাত করে নি।উপজেলা প্রশাসন তাকে অনেকবার নিষেধ করার পরও সে মাটি বিক্রি করা বন্ধ করেনি।এর আগে তাকে উপজেলা প্রশাসন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে তারপরও সে অবৈধ ভাবে অন্যের জমি নষ্ট করে মাটি বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে।পরে আমরা উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করলে তাকে আজকে আটক করে নিয়ে আসে এবং ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করে।জানা যায় চান্দিনা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলী মাঠে দেদারসে চলছে অবৈধ মাটি কাটার ভেকু ও ড্রেজার।কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইট ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে ও বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন পুকুর ভরাট এর মাধ্যমে কৃষি জমি বিলীন করে যাচ্ছে। যে জমিতে ড্রেজিং করা হয়, তার আশে-পাশের কৃষি আবাদি জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু অসাধু এসব ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের কারণে সাধারণ কৃষকরা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়,এ উপজেলায় বর্তমানে ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। প্রতি বছর ১ শতাংশ কৃষি জমি অবৈধ ড্রেজিং সহ বিভিন্ন কারণে কমে যাচ্ছে। এতে খাদ্য-শস্য ও ফসল উৎপাদনও আনুপাতিক হারে কমছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক অভিযোগ করেন,চান্দিনায় ভেকু ও ড্রেজার এর কারণে দিন দিন ফসলি জমি কমে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন যদি এগুলো সঠিক সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয় এক সময় কৃষি জমি হ্রাস পাবে।তারা আরো বলেন‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভেকু ও ড্রেজার ব্যবসায়ীরা বর্তমান ক্ষমতায় না আসা নব্য নেতাকর্মীদের সাথে আঁতাত করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অবৈধ ভেকু দিয়ে বিভিন্ন বিক্সে মাটি বিক্রি করছে ও ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা। উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভয়ে কথা বলতে পারছেনা ভুক্তভোগী সহ স্থানীয় কৃষকরা।’জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগে তৎকালীন উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ মাটি-বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ভেকু ও ড্রেজার মেশিন ভেঙে দেওয়াসহ জড়িতদের অর্থদণ্ডের পাশাপাশি কারাদণ্ড ও প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা প্রশাসনের কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল অবৈধ ড্রেজিং।এব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম জানান, চান্দিনায় ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। আগামী বছর ১শত ৩১ হেক্টর কৃষি জমি হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অবৈধ ভাবে ভেকু দিয়ে মাটি বিক্সে বিক্রি ও ড্রেজার এর মাধ্যমে মাটি উত্তোলন, মৎস্য প্রকল্প তৈরী, বাড়ি-ঘর ও রাস্তা নির্মাণের কারণে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে।এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন জানায় ‘আমি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) সকালে মাইজখার ইউনিয়ন এর পানিপাড়া গ্রামের এমরান নামে এক স্কুল শিক্ষক কে অবৈধ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী কৃষি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কাটার অপরাধে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা ও ভেকু মেশিন জব্দ করেছি।অভিযোগ পেলেই আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান করে এসব ভেকু,ড্রেজার ধ্বংস করা সহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।অবৈধ ড্রেজিং এর অভিযান আমাদের অব্যাহত থাকবে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দাউদকান্দিতে বাল্যবিয়ে ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সাংস্কৃতিক সমাবেশ

চান্দিনায় উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে অবৈধ ভেকু জব্দ, স্কুল শিক্ষককে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা

আপডেট সময় ০১:০৪:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫

 

ইয়াছিন আরাফাত, স্টাফ রিপোর্টার

কুমিল্লার চান্দিনায় উপজেলা প্রশাসন এর অভিযানে এক অবৈধ মাটি কাটার ভেকু জব্দ ও স্কুল শিক্ষক কে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা।শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি)সকালে চান্দিনা উপজেলা প্রশাসন এর অভিযানে মাইজখার ইউনিয়ন এর পানিপাড়া গ্রামের নাজমুল মিয়ার ছেলে ভোমরকান্দি হাইস্কুলের আরবী শিক্ষক এমরান কে অবৈধ ভাবে ভেকু দিয়ে ফসলি জমি কাটার অপরাধে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা ও একটি ভেকু জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিয়া হোসেন,সহযোগীতায় ছিলেন চান্দিনা থানা পুলিশ, আনসার ও সঙ্গীয় ফোর্স।এ বিষয় এলাকা বাসী জানায়, পানিপাড়া গ্রামের নাজমুল মিয়ার ছেলে এমরান সে পেশায় একজন হাইস্কুলের আরবী শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম হয়ে কিভাবে দীর্ঘদিন যাবত আশেপাশের জমি নষ্ট করে অবৈধ ভাবে মাটি বিক্রি করে আসছে তাকে এলাকার লোকজন বাঁধা দিলেও সে কারো কথায় কর্ণপাত করে নি।উপজেলা প্রশাসন তাকে অনেকবার নিষেধ করার পরও সে মাটি বিক্রি করা বন্ধ করেনি।এর আগে তাকে উপজেলা প্রশাসন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে তারপরও সে অবৈধ ভাবে অন্যের জমি নষ্ট করে মাটি বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে।পরে আমরা উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করলে তাকে আজকে আটক করে নিয়ে আসে এবং ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করে।জানা যায় চান্দিনা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলী মাঠে দেদারসে চলছে অবৈধ মাটি কাটার ভেকু ও ড্রেজার।কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইট ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে ও বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন পুকুর ভরাট এর মাধ্যমে কৃষি জমি বিলীন করে যাচ্ছে। যে জমিতে ড্রেজিং করা হয়, তার আশে-পাশের কৃষি আবাদি জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু অসাধু এসব ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের কারণে সাধারণ কৃষকরা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়,এ উপজেলায় বর্তমানে ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। প্রতি বছর ১ শতাংশ কৃষি জমি অবৈধ ড্রেজিং সহ বিভিন্ন কারণে কমে যাচ্ছে। এতে খাদ্য-শস্য ও ফসল উৎপাদনও আনুপাতিক হারে কমছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক অভিযোগ করেন,চান্দিনায় ভেকু ও ড্রেজার এর কারণে দিন দিন ফসলি জমি কমে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন যদি এগুলো সঠিক সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয় এক সময় কৃষি জমি হ্রাস পাবে।তারা আরো বলেন‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভেকু ও ড্রেজার ব্যবসায়ীরা বর্তমান ক্ষমতায় না আসা নব্য নেতাকর্মীদের সাথে আঁতাত করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অবৈধ ভেকু দিয়ে বিভিন্ন বিক্সে মাটি বিক্রি করছে ও ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা। উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভয়ে কথা বলতে পারছেনা ভুক্তভোগী সহ স্থানীয় কৃষকরা।’জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগে তৎকালীন উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ মাটি-বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ভেকু ও ড্রেজার মেশিন ভেঙে দেওয়াসহ জড়িতদের অর্থদণ্ডের পাশাপাশি কারাদণ্ড ও প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা প্রশাসনের কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল অবৈধ ড্রেজিং।এব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম জানান, চান্দিনায় ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। আগামী বছর ১শত ৩১ হেক্টর কৃষি জমি হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অবৈধ ভাবে ভেকু দিয়ে মাটি বিক্সে বিক্রি ও ড্রেজার এর মাধ্যমে মাটি উত্তোলন, মৎস্য প্রকল্প তৈরী, বাড়ি-ঘর ও রাস্তা নির্মাণের কারণে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে।এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন জানায় ‘আমি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) সকালে মাইজখার ইউনিয়ন এর পানিপাড়া গ্রামের এমরান নামে এক স্কুল শিক্ষক কে অবৈধ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী কৃষি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কাটার অপরাধে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা ও ভেকু মেশিন জব্দ করেছি।অভিযোগ পেলেই আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান করে এসব ভেকু,ড্রেজার ধ্বংস করা সহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।অবৈধ ড্রেজিং এর অভিযান আমাদের অব্যাহত থাকবে।