ছবি: বুড়িচংয়ের কাকিয়ারচর গ্রামের দৃশ্য।
নেকবর হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লাজুড়ে জেঁকে বসেছে শীত।সূর্যের দেখা নেই তিনদিন ধরে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে চারপাশ।ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বাড়ছে শীতের তীব্রতা।এতে বিপাকে পড়ছেন দিনমজুর, খেটে খাওয়া এবং ছিন্নমূল শ্রেণির মানুষ।জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছেন, আরও এক থেকে দুইদিন বিরাজ করবে এমন পরিস্থিতি।তাপমাত্রা কমে শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে থাকবে ঘন কুয়াশাও। তবে মাঝে কিছুটা তাপমাত্রা বাড়লেও শীতের অনুভূতি থাকবে। কুমিল্লায় গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ছিল ১৪.০০ ডিগ্রি সিলসিয়াসের কাছাকাছি। আর দিনের বেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০.৫ ডিগ্ৰি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। স্বাভাবিক তুলনায় কম তাপমাত্রা থাকায় এবং সূর্যের দেখা না মেলায় দিনভর শীত অনুভূতি ছিল প্রকৃতিতে।এদিকে এ ঘন কুয়াশার কারণে অনেক বেলা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায় যানবাহনকে। বিশেষ করে দ্রুতগতির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের গতি অর্ধেকের কমে এসেছে। সঙ্গে তৈরি হচ্ছে দুর্ঘটনার শঙ্কাও। এই ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীতে উপেক্ষা করে দিনমজুর এবং খেটে খাওয়া মানুষ রাস্তায় বের হলেও মিলছে না কাজের সন্ধান। তিন চাকার পরিবহনে নেই যাত্রী। এতে চরম বিপর্যয়ে পড়ার কথা বলছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো।কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে কাজের সন্ধানে আসা হেলাল , সোহেল ও গিয়াস উদ্দিনসহ বেশকয়েকজন শ্রমিক বলেন, ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীতে তাদের কাজ কমেছে। কাকডাকা ভোরে কান্দিরপাড়ে কাজের সন্ধানে হাজির হলেও বেলা ১০টা পর্যন্তও কাজে নেয়নি কেউ। যার কারণে কাজ না করেই ফিরতে হবে বাসায়। একদিন কাজ না করলে উর্ধ্বমুখী নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে চলা খুব কষ্ট হয়ে যায়।ভাসমান হকার জুমান মিয়া জানান, গত তিনদিন ধরে কুয়াশা ও শীতের সঙ্গে ঠাণ্ডার পরিমাণ বেশি। সকালে ও রাতে ঠাণ্ডা বেশি লাগে। এমন ঠাণ্ডা শুরু হলে কয়েকদিনের মধ্যে সকাল সকাল হয়তো রাস্তায় বের হওয়া সম্ভব হবে না।অটোরিকশা চালক সাইদুল মিয়া বলেন, কষ্ট হলেও নিজের জীবিকার তাগিদে ভোরেই গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়েছে। আজ আগে থেকে অনেক বেশি ঠাণ্ডা পড়েছে। না বের হলেও মালিককে ৫শ টাকা চুক্তি অনুযায়ী দিতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে বের হয়েছি।কুমিল্লার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, দিনের বেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা না থাকা এবং কুয়াশার প্রভাবে সূর্যের আলো প্রকৃতিতে না পৌঁছানোর কারণে সন্ধ্যার পর থেকে জুড়ে বসতে থাকে শীত। রাত যত বাড়তে থাকে তাপমাত্রাও তত কমতে থাকে। শুরু হয় শীতে তীব্রতা।তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে কুমিল্লায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।