
মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক
রোববার (২৬ জানুয়ারি) শেষ বিকেলে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার- মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানার শেষ কর্ম দিবসে দায়ীত্ব হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে ১ বছর ১০ মাস ৬ দিনের পরিসমাপ্তি টেনে বিদায় নিলেন।ইউএনও নিগার সুলতানার বর্তমান কর্মস্থল চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ উপজেলায়, সেখানে তিনি আগামী মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) যোগদান করবেন।এঅল্প সময়ে ইউএনও নিগার সুলতানার সাথে মানবিক কাজগুলোর বিশাল সেরেস্তি রয়েছে।তিনি যখন এ কর্মস্থলে যোগদান করেন তখন একটি কঠিন মূহুর্ত ছিল। ইউএনও, ওসিরা দেবীদ্বার কর্মস্থলে যোগদানে অনাগ্রহ প্রকাশ করতেন।কেউ যোগদান করলেও দ্রুত বিদায়ের চেষ্টা করতেন।ইউএনও নিগার সুলতানা তখন সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের হাজী রোশন আলী মাষ্টারের আধিপত্যের দ্বন্দ্ব সংকটে পড়েন, এরই মধ্যে পৌর নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন।পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য পদে মো. আবুল কালাম আজাদ এমপি হন, তার ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারমযান মামুনুর রশিদ, পৌর মেয়র নির্বাচিত হন মো. সাইফুল ইসলাম শামিম।নতুন নেতৃত্বের আগমন ঘটে।এদের দ্বন্দ্ব সামলাতেই যখন হিমশিম খাচ্ছিল তখন দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মোড় ঘুরে।৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার গনঅভ্যূত্থানের পর মূহুর্তে মধ্যেই পূর্বের জঞ্জাল ছাফ হয়ে গেল। নতুন করে দেখা দিল নতুনদের প্রভাব।সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মূন্সী ও তার পুত্র রিজভিউল আহসান মূন্সী, অপরদিকে বিএনপি কুমিল্লা উত্তর জেলার সদস্য সচিব এএফএম তারেক মূন্সী, বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল খানদের আধিপত্য বিস্তার।সাথে জামায়াত ইসলামী, সমন্বয়ক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এর সাথে সমন্বয় করে কাজ করা।ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা এবং উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের ঘাটতি পুরনে এগিয়ে যাওয়া।সামাজিক কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন দিক সামলে এক কঠিন যুদ্ধ ময়দানে টিকিয়ে রাখা যে ধৈর্য্য, বিচক্ষণতা একজন নারী ইউএনও হিসেবে দেখিয়েছেন এবং ২০ মাস ৬ দিন টিকে থাকার নজির রেখেছেন, আমার মনে হয় বাংলাদেশে এমন উপজেলা নেই, যে উপজেলার ইউএনও এত যুদ্ধ করে এতো দীর্ঘ সময় টিকে আছেন বা থাকতে পেরেছেন।তবে এটা সত্য যে, এতো ভেজাল সময়ের মধ্যেও পযারা নিয়ে তিনি দেবীদ্বারবাসীকে যেটুকু সময় দিয়েছেন, সেটুকুতে তার বিদায়ের সংবাদে সাধারণ মানুষের মনে দাগ কাটতে পেরেছেন।মানুষ আফসোস করেছেন, আরো কিছুদিন ওনার সেবা পেতে চেয়েছেন।তবে আমি খুশী মানে মানে তথা সম্মানের সাথে এসময়টা অতিবাহীত করতে পেরেছেন।আরো কিছুদিন থাকলে হয়তো সেটা সময়ে মূল্যায়ন করত।আমি ব্যক্তিগতভাবে এমপি চেয়ারম্যাদের রোষানলে থাকি, কেন থাকি তা জানিনা, তবে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এবং ২৪শের গনঅভূ্যত্থার পর প্রশাসনের সাথে সামাজিক ও মানবিক কাজগুলোর সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরেছি। শেষদিকে ইউএনও নিগার সুলতানার বদলীর আদেশ প্রাপ্তির পর যে সময়টা ছিল এবং এর পূর্বে যে সকল মানবিক কাজগুলো তিনি করে দিয়েছেন তার আমলনামা পরবর্তীতে তুলে ধরার চেষ্টা করব।দোয়া করি ইউএনও নিগার সুলতানা যেখানেই থাকেন সুস্থতার সাথে মানবিক কাজগুলোর সাথে সম্পৃক্ত থাকবেন।এবং নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসনাত খাঁনের যোগদান করে দায়িত্বভার গ্রহন করলেন।